হজ্জ ইসলামের অন্যতম ইবাদত। ইবরাহীম (আঃ)-এর সময় থেকে আরবের মানুষদের মধ্যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাবাগৃহের হজ্জ আদায়ের রীতি প্রচলিত ছিল। পরবর্তী যুগে যখন শিরকের প্রসার ঘটে তখন কাবাগৃহের হজ্জ ছাড়াও বিভিন্ন উপাস্যের সন্তুষ্টি, আশীর্বাদ, বর বা বরকত লাভের জন্য মুশরিকগণ আরো অনেক ‘পবিত্র’ স্থানে গমন করত বলে হাদীস শরীফ থেকে জানা যায়। এগুলির মধ্যে ছিল ইয়ামানের ‘রিয়াম’ নামক মন্দির এবং খাস‘আমদের ‘যুল খুলাইসা’ নামক মন্দির।[1]

এ বিষয়ে শাহ ওয়ালি উল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলবী বলেন: মুশরিকদের একপ্রকার শির্ক ছিল আল্লাহ ছাড়া অন্যের জন্য হজ্জ। এর স্বরূপ এই যে, এরূপ মুশরিকগণ তাদের ‘উপাস্য-শরীকদের’ স্মৃতি বিজড়িত বিশেষ কিছু স্থানকে বরকতময় বলে বিশ্বাস করে এবং সে সকল স্থানে গমন ও অবস্থান এ সকল শরীকের নৈকট্য ও দয়া লাভের উপায় বলে বিশ্বাস করে। ইসলামী শরীয়তে এরূপ করতে নিষেধ করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন[2]:

لا تُشَدُّ الرِّحَالُ إِلا إِلَى ثَلاثَةِ مَسَاجِدَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَمَسْجِدِ الرَّسُولِ (ﷺ) وَمَسْجِدِ الأَقْصَى (مَسْجِدِ الْحَرَامِ وَمَسْجِدِ الأَقْصَى وَمَسْجِدِي)

‘‘তিনটি মাসজিদ ছাড়া কোথাও সফরে যাওয়া যাবে না: মাসজিদুল হারাম, আমার মাসজিদ (মাসজিদে নববী) ও মাসজিদুল আকসা।’’[3]

[1] বুখারী, আস-সহীহ ৩/১১১০; মুসলিম, আস-সহীহ ৪/১৯২৫-১৯২৬; তাবারী, তাফসীর ২৬/১৫৫।
[2] বুখারী, আস-সহীহ ১/৩৯৮, ৪০০, ২/৬৫৯, ৭০৩; মুসলিম, আস-সহীহ ২/১০১৪-১০১৫।
[3] শাহ ওয়ালি উল্লাহ, হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ ১/১৮৮।